এন্টিবায়োটিক কি?

 এন্টিবায়োটিক কি?

“এন্টিবায়োটিক” হলো এমন একটা উপাদান যা ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস থেকে সংগ্রহ করে অন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস কে ধ্বংস জন্য বা তার বংশবৃদ্ধি রোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্যাকটেরিয়া নিজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারেনা বিধায় নিজেদের অঞ্চল থেকেই তাদের খাদ্য সংগ্রহ করার কারনে তারা একই অঞ্চলে থাকা অন্য ব্যাকটেরিয়া গুলোর সাথে প্রতিযোগীতা করে। এক ব্যাকটেরিয়া আরেক ব্যাকটেরিয়া কে মারার জন্য এন্টিবায়োটিক তৈরী করে। এই এন্টিবায়োটিক ই আমরা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করি।



এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতাঃ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী “বিশ্ব এ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ” (১৬-২২ নভেম্বর) পালন করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে এটা মনে করিয়ে দেয়া যে এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, তাই এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া দরকার। তা না হলে ওষুধ হিসেবে এটা কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলবে। আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। জীবন রক্ষাকারী অতীব প্রয়োজনীয় ওষুধ এর ব্যবহার হওয়া উচিত পরিমিত, সীমিত ও শুধুমাত্র প্রয়োজনে। সর্দি, কাশি, জ্বরের মত সাধারন রোগের জন্য আমরা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই এন্টিবায়োটিক সেবন করি যা একদমই ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার মাঝে “এন্টিবায়োটিক-রোধী” ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছে। এতে অনেক সময় সাময়িকভাবে রোগ সেরে গেলেও রোগীকে পরবর্তীতে ঐ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগতে হয়, যেমনঃ যক্ষা, শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং গণোরিয়ার মতো যৌনরোগের চিকিৎসার কার্যকারিতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এন্টিবায়োটিক রেজিষ্ট্যান্ট যক্ষা এখন প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে।


এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি?

এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়াকে বলা হয় এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স যা আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই ক্ষেত্রে ঔষধ খেয়েও ভালো ফল পাওয়া যায় না, কারন জীবাণুর বিপক্ষে এন্টিবায়োটিক আর কাজ করতে পারেনা।


এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কিভাবে হয়?

প্রয়োজনের অতিরিক্ত, অপ্রয়োজনে অথবা অতিরিক্ত এ্যান্টিবায়োটিক সেবনে শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু তার নিজের জিনেটিক কোডে এমন পরিবর্তন আনে যে সেই এন্টিবায়োটিক তার তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনা।


এন্টিবায়োটিকের অন্যান্য ক্ষতিকর দিকগুলোঃ

# স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়: এন্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শারীরিক স্থূলতার ঝুঁকি থাকে।

# পেটের প্রদাহঃ দীর্ঘস্থায়ী এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারে অন্ত্রের প্রাচীরে ঘা সৃষ্টি করতে পারে।

# লিভারের ক্ষতিসাধনঃ লিভারের ক্ষতিসাধনের জন্য অন্যান্য ঔষধের মধ্যে এন্টিবায়োটিক সবচেয়ে দায়ী।

# টাইপ ২ ডায়াবেটিস জন্য দায়ী: এন্টিবায়োটিক অন্ত্রের অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়াও মেরে ফেলে যাতে অগ্ন্যাশয়ের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।

# এজমার জন্য দায়ী: এন্টিবায়োটিক এজমা থেকে রক্ষাকারী ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে ফেলায় এজমা হওয়ার সমাভবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।


এন্টিবায়োটিকের ক্ষতিকর দিক রোধে আমাদের করনীয়ঃ

১) ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সাধারন রোগে ভুগলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করা।

২) ডাক্তারের পরামর্শ মত ডোজ ও সময় অনুসারে এন্টিবায়োটিক সেবন করা।

৩) ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রে দেয়া ঔষধের ব্যাপারে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করা, কোন ঔষধ কেন দেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে ধারনা নেয়া।

৪) মেয়াদ উত্তীর্ণ এন্টিবায়োটিক সেবন না করা।




Picked up.


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত আলগী নদী!

"রহস্যে ঘেরা"পর্ব-০৪

"রহস্যে ঘেরা " পর্ব-৫